দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ১০৮৪ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ৪৫ হাজার ০৭৭ জন।

আজ রবিবার (২১জুন) দুপুরে করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

বরাবরের মতোই বুলেটিনে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ–নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।

ভাইরাসে সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। তবে সুস্থ হয়ে উঠার সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। এ পর্যন্ত ৪৭ লাখেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৪৭ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৬ জন। করোনা থেকে এত মানুষের সুস্থ হয়ে ওঠার এই পরিসংখ্যান আমাদের আশার আলো দেখায়।

২০১৯ এর ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম হামলা হয়েছিল করোনার। চীন থেকে ইরান হয়ে ইউরোপের ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে মরণ কামড় বসিয়েছে করোনা।

ইউরোপকে তছনছ করার মধ্যেই উত্তর আমেরিকায় হামলা শুরু করে করোনা। এই ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে মোট ১ লাখ ২১ হাজার ৯৮০ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৫৩৮।

বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের। শুক্রবারও সেখানে ৩১ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে এবং আরও ৯৬৮ জন মারা গেছে। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৭০ হাজার ১৩৯ জন। আর মোট মারা গেছে ৫০ হাজার ৫৮ জন। দেশটিতে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও তুলনামূলক কম। সেখানে মোট সুস্থ হয়েছে ৫ লাখের বেশি মানুষ। আর চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৮৯৫ জন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এই অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা দখল করে নেবে দেশটি। করোনা তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে ট্রাম্পের দেশ।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। সেখানে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯১ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭শ জনই সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় ৯ হাজার মানুষ। বর্তমানে দেশটিতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা মাত্র ৭ হাজার ৫৫৫ জন।

এছাড়া সুস্থ হওয়ার তালিকায় এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো।

এদিকে করোনা তালিকার সেরা পাঁচে থাকা বাকি তিনটি দেশ হচ্ছে যথাক্রমে রাশিয়া (আক্রান্ত ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯৫২ জন; মৃত্যু ৮ হাজার ২ জন, ভারত (আক্রান্ত ৪ লাখ ১১ হাজার ৭২৭ এবং মৃত্যু ১৩ হাজার ২৭৭ জন) যুক্তরাজ্য (আক্রান্ত মোট ৩ লাখ ৩ হাজার ১১০ জন ও মৃত্যু ৪২ হাজার ৫৮৯ জন) ও স্পেন (আক্রান্ত ২ লাখ ৯৩ হাজার ১৮ জন ও মৃত্যু ২৮ হাজার ৩২২ জন)।

আফ্রিকার কিছু দেশেও বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। তবে আপাতত নিরাপদ অস্ট্রেলিয়া এবং ওশেনিয়া মহাদেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট বলছে, এবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি যেমন, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশে করোনার সামাজিক সংক্রমণ ও মৃত্যু রীতিমতো উদ্বেগ তৈরি করছে।

বাংলাদেশে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড ভাঙছে। শনিবার আরও ৩ হাজার ২৪০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৭৭৫ জন। এদিন আরও ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪২৫ জনে। আর মোট সুস্থ হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৯৩ জন।

ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন